১০ বছর চাঁদা দিলে আজীবন পেনশন

নয়াবার্তা প্রতিবেদক : দেশের প্রাপ্তবয়স্ক সব নাগরিককে পেনশনের আওতায় আনার কার্যক্রম শুরু হবে আগামী অর্থবছরে। গতকাল বৃহস্পতিবার সর্বজনীন পেনশন কার্যক্রম শুরুর ঘোষণা দিয়েছেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল। জাতীয় সংসদে আগামী অর্থবছরের বাজেট উপস্থাপনকালে তিনি এ ঘোষণা দেন।

অর্থমন্ত্রী বলেন, আওয়ামী লীগের নির্বাচনী অঙ্গীকার অনুযায়ী চলতি অর্থবছরের বাজেট বক্তৃতায় সর্বজনীন পেনশন পদ্ধতি প্রবর্তনের প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়েছিল। এ কার্যক্রম ইতোমধ্যে অনেকদূর এগিয়েছে। সর্বজনীন পেনশন ব্যবস্থাপনা আইন পাস হয়েছে। শিগগির পেনশন কর্তৃপক্ষ গঠন করা হবে। আশা করা হচ্ছে, ২০২৩-২৪ অর্থবছর থেকেই সর্বজনীন পেনশন স্কিম চালু করা সম্ভব হবে। তিনি বলেন, প্রস্তাবিত স্কিমে অন্তর্ভুক্ত হলে ১৮ বছর থেকে ৫০ বছর বয়সী একজন সুবিধাভোগী ৬০ বছর বয়স পর্যন্ত এবং ৫০ বছরের অধিক বয়স্ক একজন সুবিধাভোগী ন্যূনতম ১০ বছর চাঁদা প্রদান সাপেক্ষে আজীবন পেনশন সুবিধা ভোগ করতে পারবেন। এ কার্যক্রমে প্রবাসীরাও অংশ নিতে পারবেন। পেনশনে থাকাকালীন ৭৫ বছর বয়স পূর্ণ হওয়ার আগে মৃত্যুবরণ করলে পেনশনারের নমিনি পেনশনারের ৭৫ বছর পূর্ণ হওয়ার অবশিষ্ট সময় পর্যন্ত পেনশন পাবেন।

এদিকে চাঁদাদাতা কমপক্ষে ১০ বছরের চাঁদা প্রদান করার আগেই মৃত্যুবরণ করলে জমা করা অর্থ মুনাফাসহ নমিনিকে ফেরত দেওয়া হবে। চাঁদাদাতার আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে জমা করা অর্থের সর্বোচ্চ ৫০ শতাংশ পর্যন্ত ঋণ হিসেবে দেওয়া হবে। পেনশনের জন্য নির্ধারিত চাঁদা বিনিয়োগ হিসেবে গণ্য হবে। এর বিপরীতে কর রেয়াত সুবিধা পাওয়া যাবে। এ ছাড়া মাসিক পেনশন বাবদ প্রাপ্ত অর্থ আয়করমুক্ত থাকবে।

অর্থ মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, আগামী জুলাইয়ে আগ্রহীদের নিয়ে পরীক্ষামূলক কার্যক্রম শুরুর পরিকল্পনা রয়েছে। এ জন্য ছয় ধরনের স্কিম নিয়ে সর্বজনীন পেনশন আইনের বিধিমালার খসড়া প্রণয়ন করেছে অর্থ বিভাগ। দেশের ১৮ থেকে ৫০ বছর বয়সী প্রায় ১০ কোটি নাগরিককে ছয়টি শ্রেণি অনুযায়ী ভাগ করে এই স্কিম নির্ধারণ করা হয়েছে। এগুলো হলো– বেসরকারি প্রাতিষ্ঠানিক চাকরিজীবী পেনশনার, প্রবাসী/অনিবাসী পেনশনার, শ্রমিক শ্রেণি, অপ্রাতিষ্ঠানিক জনগোষ্ঠী, সামাজিক সুরক্ষা কর্মসূচিভুক্ত জনগোষ্ঠী এবং শিক্ষার্থী। প্রতিটি স্কিম হবে স্বতন্ত্র। সব স্কিমে একটি ন্যূনতম চাঁদার হার নির্ধারিত থাকবে।

শুরুতে মডেল জেলা হিসেবে রাখা হতে পারে ঢাকা এবং দেশের অন্য যে কোনো একটি জেলাকে। পরীক্ষামূলক কার্যক্রমের মেয়াদ এক থেকে দুই বছর হতে পারে। এর সাফল্যের ওপর ভিত্তি করে পরে তা সারাদেশে বিস্তৃত করা হবে। তবে শুরুর প্রক্রিয়াটি হবে সীমিত পরিসরে। সর্বজনীন পেনশন ব্যবস্থা সারাদেশে চালু হওয়ার পর অন্তত পাঁচ বছর তা ঐচ্ছিক রাখা হবে। ২০৩০ সালের মধ্যে এটি সবার জন্য বাধ্যতামূলক করা হতে পারে।

Share