বিনোদন প্রতিবেদক : মোহাম্মদ নূরুজ্জামান পরিচালিত চলচ্চিত্র ‘আম-কাঁঠালের ছুটি’ প্রেক্ষাগৃহে মুক্তি পায় গত বছর। সিনেমাটি এর আগে বিভিন্ন আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবে প্রদর্শিত ও পুরস্কৃত হয়েছে। শিশুতোষ চলচ্চিত্রটির প্রধান চরিত্র ‘মইন্না’র ভূমিকায় অভিনয় করে প্রশংসিত হয়েছে শিশুশিল্পী লিয়ন আহমেদ।
কিন্তু এখন নির্মাতা বলছেন, শুটিং শেষ হওয়ার পর থেকেই লিয়নের কোনো খোঁজ নেই। সম্প্রতি একটি পুরস্কারের জন্য মনোনীত হয়েছে লিয়ন। কিন্তু তাকে কোথাও খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। এ নিয়ে নির্মাতা ফেসবুকে পোস্ট দিয়েছেন।
নির্মাতা মোহাম্মদ নূরুজ্জামান ফেসবুকে লিখেছেন, ‘গতকাল (রোববার) একটা প্রভাবশালী পুরস্কার কমিটি থেকে ফোন করে আমার কাছ থেকে লিয়নের কন্টাক্ট নম্বর চেয়েছে। বলা হয়েছে, যেভাবেই হোক, আমি যেন লিয়নের সঙ্গে যোগাযোগের একটা ব্যবস্থা করে দিই। অথচ বছর চারেক যাবৎ সে লাপাত্তা!’
নির্মাতা আরও লিখেছেন, ‘আম-কাঁঠালের ছুটি সিনেমার প্রধান চরিত্র মইন্নার ভূমিকায় অভিনয় করেছে লিয়ন আহমেদ। ২০১৭ সালে সিনেমার শুটিং শেষ হওয়ার পর খুব একটা টঙ্গী এলাকায় যাইনি বলে ওর সঙ্গে আর দেখা হয়নি। পরে ডাবিংয়ের জন্য ও নারায়ণগঞ্জে এসেছিল, কিন্তু বয়ঃসন্ধিকালের স্বাভাবিক নিয়মে কণ্ঠস্বর বদলে যাওয়ায় ওর সংলাপে কণ্ঠ দেয় মুন্না নামের আরেক ছেলে। সেটাই ছিল ওর সঙ্গে শেষ দেখা।’
সবশেষ লিয়নের সঙ্গে নির্মাতা মোহাম্মদ নূরুজ্জামানের যোগাযোগ হয় কোভিডের সময়। এরপর থেকে যোগাযোগ করার একমাত্র নম্বরটিও বন্ধ পাওয়া যায় বলে জানান তিনি।
নির্মাতা লিখেছেন, ‘কোভিডের কিছু আগে একবার ফোন করেছিল লিয়ন। সিনেমার কাজ কবে শেষ হবে জানতেও চেয়েছিল। পরে সিনেমার সব কাজ শেষ হয়ে গেলে যোগাযোগ করতে গিয়ে সেই নম্বরটা বন্ধ পাওয়া যায়। যুবরাজ শামীম মারফত তখন জানতে পারি, ওরা টঙ্গী ছেড়ে চলে গেছে। সম্ভবত ঋণগ্রস্ত হয়ে পড়ায় ওর পরিবার একরকম পালিয়েই এলাকা ছেড়েছে। আর তাই হয়তো ফোন নম্বরও বদলে ফেলেছে।’
নির্মাতা ভেবেছিলেন সিনেমা মুক্তির প্রচারের সময় পোস্টার, পত্রিকা, টেলিভিশন কিংবা ইউটিউবে নিজের ছবি দেখে লিয়ন ঠিকই যোগাযোগ করবে। কিন্তু সেই অপেক্ষা আর ফুরায়নি।
নির্মাতা লিখেছেন, ‘সিনেমা মুক্তির আগেও ওর সঙ্গে আর যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি। একটা অসমর্থিত সূত্রে জেনেছিলাম, লিয়ন ময়মনসিংহে রাজমিস্ত্রির কাজ করে। ভেবেছিলাম পোস্টার, পত্রিকা, টেলিভিশন কিংবা ইউটিউবে নিজের ছবি দেখে লিয়ন হয়তো যোগাযোগ করবে। কিছুতেই কিছু হয়নি।’
সবশেষ নির্মাতা লিখেছেন, ‘সম্ভবত লিয়নের জন্য একটা সম্মানজনক পুরস্কার অপেক্ষা করছে, অথচ সে হয়তো ভুলেই গেছে কোনো একসময় একটা সিনেমার প্রধান চরিত্রে অভিনয় করেছিল, কিংবা কম বয়সের ছবি দেখে এখন হয়তো নিজেই নিজেকে আর চিনতে পারছে না!’
পরে এ ব্যাপারে বিস্তারিত জানতে নির্মাতা মোহাম্মদ নূরুজ্জামানের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়। তিনি বলেন, ‘আমার ‘‘আম-কাঁঠালের ছুটি’’ সিনেমার প্রধান চরিত্রে অভিনয় করেছিল লিয়ন। কিন্তু সিনেমাটি নির্মাণ শেষে তার পরিবারকে পুরোনো ঠিকানায় আর আমরা খুঁজে পাইনি। তার বাবার ব্যবহৃত নম্বরটিও বন্ধ পেয়েছি। একটা প্রভাবশালী পুরস্কার কমিটি থেকে লিয়নের বিষয়ে খোঁজ করল, তাই ফেসবুকে তাকে খুঁজে পাওয়ার আশায় পোস্ট দিয়েছি।’ তবে পুরস্কারটি সম্পর্কে বিস্তারিত জানাতে রাজি হননি নির্মাতা।
মোহাম্মদ নূরুজ্জামান আরও বলেন, ‘লিয়নের পরিবার ছিল নিম্ন আয়ের। তাই হয়তো এই শহরে টিকতে পারেনি। তবে একটা অসমর্থিত সূত্রে জেনেছি, লিয়ন ময়মনসিংহে রাজমিস্ত্রির কাজ করে।’