চুনো নদীর বাঁধে ধস, পাঁচ দিনেও মেরামতের উদ্যোগ নেই

সাতক্ষীরা জেলা প্রতিনিধি : সাতক্ষীরার শ্যামনগরের দাতিনাখালী গ্রামের চুনো নদীর বাঁধে নতুন করে ধস শুরু হয়েছে। গত সোমবার থেকে নদীর চেয়ারম্যান মোড় এলাকায় ধস শুরু হয়। এরপর পাঁচ দিন পার হয়ে গেলেও বাঁধ মেরামতে কোনো উদ্যোগ নেওয়া হয়নি। বাঁধ ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় থাকায় জোয়ারের তোড়ে যে কোনো সময় ভেঙে লোকালয় প্লাবিত হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।

শ্যামনগরের বুড়িগোয়ালিনী গ্রাম থেকে সুন্দরবন বিভক্ত করেছে চুনো নদী। প্রাকৃতিক দুর্যোগ এলেই যেন বুড়িগোয়ালিনী ইউনিয়নের ১৯ গ্রামের ৪৯ হাজার মানুষের কপাল পোড়ে। ঘূর্ণিঝড় আম্পান, বুলবুল আর ইয়াসের আঘাতে এ ইউনিয়নের অধিকাংশ মানুষের কাঁচা ও আধাপাকা ঘরবাড়ি ভেঙে গিয়েছিল। ফসলের ক্ষেত ও মাছের ঘের তলিয়ে এ ইউনিয়নের মানুষ নিঃস্ব হয়ে পড়ে। এখনো তারা সেই ধকল কাটিয়ে উঠতে পারেনি। এ অবস্থায় আবার বাঁধ ভেঙে গেলে ইউনিয়নের মানুষ চরম বিপাকে পড়বে।

স্থানীয় লোকজন জানান, পাউবোর কর্মকর্তারা ক্ষতিগ্রস্ত স্থান পরিদর্শন করেই তাদের দায়িত্ব সেরেছেন। পানি উন্নয়ন বোর্ডের কর্মকর্তারা ও স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান এলাকা ঘুরে দেখে গেছেন। তবে এখনো বাঁধ মেরামতে কোনো উদ্যোগ দেখা যায়নি।

দাতিনাখালী গ্রামের গণমাধ্যমকর্মী আনিসুজ্জামান সুমন জানান, জোয়ারের পানির তোড়ে গত সোমবার বাঁধে ধস নেমেছে। এরপর থেকে ভাঙন আস্তে আস্তে বাড়ছে। ইয়াসের সময় ভেঙে যাওয়া ঘরবাড়ি এখনো অনেকেই মেরামত করতে পারেনি। এ অবস্থায় বাঁধ ভেঙে গেলে মানুষের দুর্গতির সীমা থাকবে না।

দাতিনাখালী গ্রামের দিনমজুর আমিনুর জানান, বাঁধের পাশেই তার বাড়ি। বাঁধ ভেঙে গেলে তিনি আশ্রয়হীন হয়ে পড়বেন। শুধু এই গ্রাম নয়, বাঁধটি ভেঙে গেলে ইউনিয়নের পুড়াকাঠলা, ভামিয়া ও কলবাড়ী গ্রাম তলিয়ে যেতে পারে।

জানতে চাইলে বুড়িগোয়ালিনী ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান হাজি নজরুল ইসলাম জানান, ইউনিয়ন পরিষদে বাঁধ মেরামতের কোনো বরাদ্দ থাকে না। তিনি ধসে যাওয়া বাঁধ এলাকা ঘুরে এসে পাউবো কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলেছেন। জরুরি ভিত্তিতে বাঁধটি মেরামত করার জন্য তিনি নিয়মিত পাউবোর সঙ্গে যোগাযোগ রাখছেন।

সাতক্ষীরা পাউবোর উপসহকারী প্রকৌশলী মাসুদ রানা বলেন, ‘হঠাৎ করেই ওই অংশে ধস নেমেছে। তবে বাঁধ মেরামতের জন্য বরাদ্দ চেয়ে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে। আগামী সপ্তাহের মধ্যেই মেরামত কাজ শুরু হতে পারে।’

Share