আমি চক্রান্তের শিকার : নোরা

নয়াবার্তা প্রতিবেদক : ব্যবসায়ী সুকেশ চন্দ্রশেখরের দুর্নীতির মামলার তদন্ত করতে দিল্লি পুলিশের অপরাধ শাখা (ইওডব্লিউ) কোমর বেঁধে নেমেছে। জানা গেছে, এ মামলার জালে বলিউডের বেশ কিছু নায়িকা জড়িয়ে পড়েছেন। তবে সুকেশের মামলার সঙ্গে বাজেভাবে জড়িয়ে পড়েছেন দুই বলিউড অভিনেত্রী জ্যাকুলিন ফার্নান্দেজ ও নোরা ফতেহি। গত বুধবার জ্যাকুলিনকে ইওডব্লিউর তদন্তকারী কর্মকর্তারা জিজ্ঞাসাবাদ করেছেন। গতকাল বৃহস্পতিবার নোরাকে ইওডব্লিউ সমন পাঠিয়েছিল।

নোরাকে এ নিয়ে দুবার ইওডব্লিউ জিজ্ঞাসাবাদ করল। এর আগে সেপ্টেম্বরের শুরুর দিকে তারা নোরাকে ডেকে পাঠিয়েছিল। গতকাল ইওডব্লিউর কর্মকর্তারা এ মামলার অন্যতম অভিযুক্ত এবং সুকেশের ঘনিষ্ঠ পিঙ্কি ইরানি ও নোরাকে মুখোমুখি বসিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করেছিলেন। ইওডব্লিউ নোরার কাছে চেন্নাইয়ের ওই বিশেষ অনুষ্ঠানের বিষয়ে বিস্তারিত জানতে চেয়েছিল। ২০২০ সালের ডিসেম্বরে চেন্নাইয়ের একটি পাঁচ তারকা হোটেলে অনুষ্ঠানটির আয়োজন করা হয়েছিল।

নোরা জানিয়েছেন, ওই অনুষ্ঠানের বুকিং তাঁর সংস্থা এক্সিড এন্টারটেইনমেন্ট প্রাইভেট লিমিটেডের মাধ্যমে করা হয়েছিল। ওই অনুষ্ঠানের আয়োজক ছিল এলএস করপোরেশন ও সুকেশের স্ত্রী লিনা মারিয়ার নেল আর্টিস্টি। নোরা গতকাল জিজ্ঞাসাবাদের সময় তদন্ত কর্মকর্তাদের বলেছেন, ‘অনুষ্ঠানটি বেশ ভালো ছিল। লিনা আমাকে গুচির একটি ব্যাগ ও আইফোন উপহার দিয়েছিলেন। লিনা বলেছিলেন যে ওনার স্বামী (সুকেশ) আমার অনেক বড় ভক্ত। কিন্তু ওনার স্বামী আমার সঙ্গে এখন দেখা করতে পারবেন না। আমার সঙ্গে সুকেশের ফোনে আলাপ করিয়েছিলেন লিনা। এরপর লিনা ঘোষণা করেন যে ভালোবেসে আমাকে একটি বিএমডব্লিউ গাড়ি উপহার দেবেন।’

এই কানাডিয়ান অভিনেত্রী পুলিশকে আরও বলেন, ‘শেখর নামের একজন আমাকে ফোন করেছিলেন। আমি আমার কাজিনের স্বামী ববির নম্বর দিয়ে তাঁর সঙ্গে কথা বলতে বলেছিলাম। ববির সঙ্গে যোগাযোগ করে শেখর বিএমডব্লিউ গাড়ি দেওয়ার কথা বলেছিলেন। আমি ববিকে বলতে বলেছিলাম যে আমার বিএমডব্লিউ গাড়ির প্রয়োজন নেই। কারণ, আমার কাছে বিএমডব্লিউ আছে। এরপর ববিকে বিএমডব্লিউ দেওয়ার প্রস্তাব দিয়েছিলেন শেখর। এটা কোনো চুক্তির টোকেন ছিল। এরপর ববির নামে বিএমডব্লিউ সিরিজ ফাইভ বুকিং করা হয়েছিল।’

এদিন জিজ্ঞাসাবাদের সময় পুলিশ কর্মকর্তাদের নোরা তাঁর ও সুকেশের মোবাইল চ্যাট দেখিয়েছিলেন। এ চ্যাটের স্ক্রিনশট তিনি ইওডব্লিউর কাছে জমা করেছেন। নোরা জিজ্ঞাসাবাদের সময় ইওডব্লিউকে বলেছিলেন, ‘আমি চক্রান্তের শিকার হয়েছি। আমি চক্রান্তকারী নই।’

এই বলিউড অভিনেত্রীকে জিজ্ঞাসা করা হয়েছিল যে সুকেশের কোনো কিছু তাঁর সন্দেহজনক লেগেছিল কি না। জবাবে তিনি বলেন, ‘সুকেশ ক্রমাগত মেসেজ ও ফোন দিতেন। আর আমাকে নানা উপহার দেবে বলে লোভ দেখিয়েছিলেন। তখন আমি তাঁর অভিসন্ধি বুঝতে পারি।’ নোরাকে এ দিন ছয় ঘণ্টা ধরে জিজ্ঞাসাবাদ করেছেন তদন্তকারী কর্মকর্তারা।

গত বুধবার ইওডব্লিউর কর্মকর্তারা অভিনেত্রী জ্যাকুলিনকে আট ঘণ্টা ধরে জেরা করেছিলেন। এদিন পিঙ্কি ইরানি ও জ্যাকুলিনকে একসঙ্গে বসিয়ে প্রশ্নোত্তর পর্ব চলে। তবে জ্যাকুলিনের উত্তরে সন্তুষ্ট হননি তাঁরা। তদন্তকারী কর্মকর্তাদের করা বেশ কিছু প্রশ্নের জবাব সঠিকভাবে দিতে পারেননি এই শ্রীলঙ্কান নারী।

Share