‘মাতৃগর্ভ এবং কবরেই মেয়েরা নিরাপদ’ কিশোরীর সুইসাইড নোট

নয়াবার্তা ডেস্ক : এক স্কুলছাত্রীর আত্মহত্যার তিন দিন পর একটি সুইসাইড নোট উদ্ধার করা হয়েছে। সেটিতে লেখা, ‘একজন মেয়ে কেবল মাতৃগর্ভ এবং কবরেই নিরাপদ। স্কুল শিক্ষকদেরও বিশ্বাস করা যায় না।’ তার এই নোট এটাই ইঙ্গিত দেয় যে, কিশোরীটি যৌন নিপীড়নের শিকার হয়েই আত্মহত্যা করতে বাধ্য হয়েছেন। ঘটনাটি ভারতের তামিলনাড়ু রাজ্যের চেন্নাইয়ে। খবর প্রকাশ করেছে এনডিটিভি।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গত শনিবার (১৮ ডিসেম্বর) একাদশ শ্রেণিতে পড়ুয়া ওই কিশোরীকে ঘরে রেখে বাজার করতে গিয়েছিলেন তার মা। এক ঘণ্টা পর ফিরে এসে দেখেন দরজা বন্ধ। এরপর দরজা ভেঙে ভেতরে ঢুকে দেখেন মেয়ের ঝুলন্ত লাশ।

এদিকে, এ ঘটনায় ২১ বছর বয়সী এক কলেজ ছাত্রকে আটক করেছে পুলিশ। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে সে স্বীকার করেছে, কিশোরীটির সঙ্গে তার ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক ছিল এবং সে তাকে নিপীড়নও করতো। আটক ছাত্রকে যৌন অপরাধের কঠোর সুরক্ষা আইনে অভিযুক্ত করা হয়েছে।

চেন্নাই পুলিশের এক কর্মকর্তা বলেন, ‘ওই কিশোরীর সঙ্গে যুবকটির শারীরিক সম্পর্ক হয়েছিল। গত দুই সপ্তাহ ধরে কিশোরীকে নির্যাতন এবং হয়রানি করে আসছিল বলেও স্বীকার করেছে সে। তাদের মধ্যে নোংরা মেসেজ ও পর্ন ছবির আদান-প্রদানের প্রমাণ পাওয়া গেছে।’

‘তিন বছর আগে একই স্কুলে মেয়েটি ক্লাস ৮ ও ছেলেটি একাদশ শ্রেণিতে পড়তো। এরপর মেয়েটি একটি গার্লস স্কুলে চলে যায়। এরপর ইন্সটাগ্রামের মাধ্যমে তাদের মধ্যে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক গড়ে ওঠে,’ যোগ করেন এই পুলিশ কর্মকর্তা।

সুইসাইড নোটে লেখা, ‘স্কুল নিরাপদ নয়। শিক্ষকদেরও বিশ্বাস করা যায় না। মানসিক নির্যাতনের কারণে পড়াশোনা, এমনকি ঘুমানো বন্ধ হয়ে গেছে। স্বপ্নের মাঝেও মানসিক শান্তি পাওয়া যেত না। প্রত্যেক বাবা-মায়ের উচিত মেয়েদের কীভাবে শ্রদ্ধা করতে হয় তা তাদের সন্তানদের শেখানো।’

সুইসাইড নোটে ওই কিশোরী যৌন হয়রানি বন্ধ করার আহ্বান জানিয়েছেন। একই সঙ্গে তার আত্মহত্যার সিদ্ধান্ত নিতে যাদের ভূমিকা আছে তাদের বিচারের মুখোমুখি করার দাবি জানিয়েছে। নোটে উল্লেখ করা, ‘আমার জন্য ন্যায়বিচার’ চাই। পাশাপাশি সম্ভাব্য তিন নিপীড়ক, ‘আত্মীয়-স্বজন, শিক্ষক এবং প্রত্যেকে’ উল্লেখ করা হয়েছে।

Share