রামপাল বিদ্যুৎকেন্দ্রের জন্য কয়লা এলো ইন্দোনেশিয়া থেকে

মোংলা প্রতিনিধি : বাগেরহাটের রামপাল তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রের জন্য ২৬ হাজার ৬২০ মেট্রিক টন জ্বালানি কয়লা নিয়ে মোংলা বন্দরে ভিড়েছে চীনের পতাকাবাহী জাহাজ ‘এমভি জে হ্যায়’। ইন্দোনেশিয়া থেকে ছেড়ে আসা জাহাজটি আজ ১০ জুন শনিবার ভোর ৫টায় বন্দরের হাড়বাড়ীয়া-১১ নম্বর বয়ায় ভিড়েছে। প্রতিদিন কেন্দ্রটির একটি ইউনিট চালু রাখতে প্রয়োজন হয় পাঁচ হাজার টন কয়লা।

শুক্রবার রাতে জাহাজটি বন্দরের ফেয়ারওয়ে বয়া এলাকায় পৌঁছায়। এদিন সকাল থেকেই কয়লা খালাস ও পরিবহনের কাজ শুরু হয়েছে। জাহাজ থেকে খালাস করা কয়লা লাইটারেজে করে নেওয়া হচ্ছে তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রের নিজস্ব জেটিতে। তারপর তা স্বয়ংক্রিয় পদ্ধতিতে সংরক্ষণ করা হচ্ছে কেন্দ্রটির শেডে ও গোডাউনে।

কয়লা নিয়ে আসা জাহাজটির স্থানীয় শিপিং এজেন্ট টগি শিপিং অ্যান্ড লজিস্টিক লিমিটেডের খুলনার সহকারী ব্যবস্থাপক খন্দকার রিয়াজুল হক জানান, রামপাল তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রের জন্য আমদানি করা ২৬ হাজার ৬২০ মেট্রিক টন জ্বালানি কয়লা নিয়ে জাহাজটি গত ২১ মে মোংলা বন্দরের উদ্দেশে ইন্দোনেশিয়া থেকে ছেড়ে আসে। ১৯ দিনের মাথায় জাহাজটি শুক্রবার রাতে মোংলা বন্দরের ফেয়ারওয়ে বয়ায় পৌঁছায়। সেখান থেকে জাহাজটি শনিবার ভোর ৫টার দিকে বন্দরের পশুর চ্যানেলের হাড়বাড়ীয়ার-১১ নম্বর অ্যাংকোরেজে ভিড়েছে। এরপর সকাল থেকে শুরু হয়েছে কয়লা খালাস ও পরিবহনের কাজ। খালাস কয়লা ছোট নৌযানে (লাইটারেজ) করে নেওয়া হচ্ছে রামপাল তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রের জেটিতে।

তিনি আরও জানান, এর আগে গত ১৬ মে বাংলাদেশের পতাকাবাহী জাহাজ এমভি বসুন্ধরা ইমপ্রেসে ৩০ হাজার মেট্রিক টন এবং ২৯ মে এমভি বসুন্ধরা ম্যাজেস্টি জাহাজে ৩০ হাজার ৫শ মেট্রিক টন কয়লা মোংলা বন্দর হয়ে রামপাল তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রে এসেছিল।

২০১০ সালের আগস্ট মাসে বাংলাদেশের বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড (বিপিডিবি) এবং ভারতের রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন জাতীয় তাপ বিদ্যুৎ করপোরেশনের (এনটিপিসি) মধ্যে বাগেরহাটের রামপালে এই বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণের বিষয়ে সমঝোতা হয়। এর দুই বছর পর ২০১২ সালের ২৯ জানুয়ারি এনটিপিসির সঙ্গে বিদ্যুৎকেন্দ্রটি নির্মাণে চুক্তি হয়।

চুক্তি অনুযায়ী, বাংলাদেশ-ইন্ডিয়া ফ্রেন্ডশিপ পাওয়ার কোম্পানি (প্রাইভেট) লিমিটেড (বিআইএফপিসিএল) নামে কোম্পানি গঠিত হয়। তবে শুরু থেকেই সুন্দরবনের কাছে কয়লাভিত্তিক এই বিদ্যুৎকেন্দ্রের পরিবেশগত নেতিবাচক প্রভাব নিয়ে শঙ্কা প্রকাশ করে আসছেন পরিবেশবাদীরা। এরপর কয়লা সংকটে কয়েকবার কেন্দ্র বন্ধ হয়েছিল। প্রতিদিন কেন্দ্রটির একটি ইউনিট চালু রাখতে প্রয়োজন হয় পাঁচ হাজার টন কয়লা।

এদিকে, কয়লা সংকটের কারণে ৫ জুন পটুয়াখালীর পায়রা তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্র এবং ৯ জুন চট্টগ্রামের বাঁশখালী তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্র বন্ধ হয়ে যায়। এই বিদ্যুৎকেন্দ্র দুটি বন্ধ হয়ে যাওয়ার দুঃসংবাদের মধ্যে রামপাল তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রের জন্য কয়লা নিয়ে মোংলায় ভিড়লো জাহাজটি।

Share