রায়হানকে ফাঁড়িতে রাখা হয় ৩ ঘণ্টা ১৫ মিনিট

নিজস্ব জেলা প্রতিবেদক : নির্যাতনে নিহত যুবক রায়হান উদ্দিনকে সিলেট নগরীর বন্দরবাজার ফাঁড়িতে রাখা হয় ৩ ঘণ্টা ১৫ মিনিট। সিটি ক্যামেরার ফুটেজ থেকে এ তথ্য জানা গেছে। রায়হানকে ফাঁড়িতে ধরে নেয়া এবং কয়েক ঘণ্টা পর সেখান থেকে হাসপাতালে নেয়ার সিসি ক্যামেরার ফুটেজ হাতে এসেছে।

রায়হান উদ্দিনের লাশ পুনরায় ময়নাতদন্তের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তার আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে সিলেটের অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট এএইচএম মাহফুজুর রহমান লাশ কবর থেকে তুলে পুনরায় ময়নাতদন্তের নির্দেশনা দেন।

সিসি ক্যামেরার ফুটেজে দেখা গেছে, শনিবার রাত ৩টা ৯ মিনিট ৩৩ সেকেন্ডে সিএনজি অটোরিকশা থেকে পুলিশ প্রহরায় স্বাভাবিকভাবেই বন্দর ফাঁড়িতে প্রবেশ করেন রায়হান। আর সকাল ৬টা ২৪ মিনিট ২৪ সেকেন্ডে দেখা যায় দুই পুলিশ তাকে ধরে অটোরিকশায় তুলছে। সেখান থেকেই তাকে ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেয়া হয়েছে।

পিবিআই সিলেটের পুলিশ সুপার খালেদুজ্জামান জানান, মামলা পিবিআইতে হস্তান্তরের আগেই সিলেট মেট্রোপলিটন পুলিশের কোতোয়ালি থানায় দায়ের করা মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা এএসআই আবদুল বাতেন জেলা ম্যাজিস্ট্রেটের কাছে লাশ কবর থেকে তুলে পুনরায় ময়নাতদন্তের জন্য আবেদন করেন। পিবিআই তদন্তভার পাওয়ার পর সেই আবেদন বলবত রাখেন।

তিনি জানান, সেই আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতেই বুধবার দুপুরে অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট এএইচএম মাহফুজুর রহমান আবেদন মঞ্জুর করেন। লাশ কবর থেকে তুলতে একজন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটও নিয়োগ দেন। খালেদুজ্জামান জানান, দ্রুত সময়ের মধ্যেই সেই প্রক্রিয়া শুরু করা হবে।

গত রোববার সকাল ৭টা ৫০ মিনিটে সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান নগরীর নেহারীপাড়ার মৃত রফিকুল ইসলামের ছেলে রায়হান উদ্দিন। ৬টা ৪০ মিনিটের সময় গুরুতর আহতাবস্থায় তাকে হাসপাতালে ভর্তি করেছিলেন বন্দরবাজার ফাঁড়ির এএসআই আশেকে এলাহী। মারা যাওয়ার পর রায়হানের শরীরের পা ও হাতসহ বিভিন্ন স্থানে গুরুতর আঘাতের চিহ্ন পাওয়া যায়। তার হাতের নখও উপড়ানো ছিল।

ময়নাতদন্ত শেষে রোববার বাদ এশা নগরীর আখালিয়া জামে মসজিদে জানাজা হয় রায়হান উদ্দিনের। পরে আখালিয়া জামে মসজিদ সংলগ্ন কবরস্থানে তাকে দাফন করা হয়।

এ ঘটনার পর পুলিশের বিরুদ্ধে হেফাজতে নির্যাতন করে রায়হানকে মেরে ফেলার অভিযোগ ওঠে। রায়হানের স্ত্রী বাদী হয়ে কোতোয়ালি থানায় হত্যা ও পুলিশ হেফাজতে নির্যাতনের ধারায় মামলা দায়ের করেন।

রায়হানের মৃত্যুর জন্য দায়িত্বহীনতার দায়ে বন্দরবাজার ফাঁড়ির ইনচার্জ এসআই আকবর হোসেন ভূঁইয়াসহ চার পুলিশ সদস্যকে সাময়িক বরখাস্ত ও তিনজনকে প্রত্যাহার করা হয়।

Share