সেন্টমার্টিন বিক্রির মুচলেকা দিয়ে কি বিএনপি ক্ষমতায় আসতে চায়, প্রশ্ন প্রধানমন্ত্রীর

নয়াবার্তা প্রতিবেদক : প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা বলেছেন, বিএনপি গ্যাস বিক্রি করার মুচলেকা দিয়ে ক্ষমতায় এসেছিল। এখন তারা দেশ বিক্রি করবে, নাকি সেন্টমার্টিন দ্বীপ বিক্রি করার মুচলেকা দিয়ে ক্ষমতায় আসতে চায়? আমি দেশের কোনো সম্পদ কারো কাছে বিক্রি করে ক্ষমতায় আসতে চাই না।

বুধবার (২১ জুন) দুপুরে গণভবনে সম্প্রতি সুইজারল্যান্ডে প্রধানমন্ত্রীর ওয়ার্ল্ড অব ওয়ার্ক সামিট এবং কাতার ইকনোমিক ফোরামে অংশগ্রহণ সম্পর্কিত সফর নিয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা বলেন। শুরুতে তিনি সফর নিয়ে লিখিত বক্তব্য তুলে ধরেন।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবের কন্যা, আমার হাত দিয়ে এই দেশের কোনো সম্পদ বিক্রি হবে না। কারও কাছে বিক্রি করে ক্ষমতায় আসতে চাই না। ওই গ্যাস বিক্রির মুচলেকা দিলে আমিও ক্ষমতায় থাকতে পারতাম। এখনও যদি বলি সেন্টমার্টিন দ্বীপ বা আমাদের দেশ কাউকে লিজ দেব, তাহলে আমার ক্ষমতায় থাকার কোনও অসুবিধা নেই। আমি জানি সেটা।’

প্রধানমন্ত্রী গত ১৪ থেকে ১৫ জুন অনুষ্ঠিত ‘ওয়ার্ল্ড অব ওয়ার্ক সামিট: সোশ্যাল জাস্টিস ফর অল’ এ যোগ দেন। ১৩ জুন সুইজারল্যান্ডের জেনেভায় যান তিনি। ১৭ জুন তিনি সুইজারল্যান্ডের জেনেভা থেকে দেশে ফেরেন। এর আগে, গত ২৩ থেকে ২৫ মে কাতারের রাজধানী দোহায় অনুষ্ঠিত তৃতীয় কাতার ইকোনমিক ফোরামে যোগ দেন প্রধানমন্ত্রী।

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের দিকে ইঙ্গিত করে শেখ হাসিনা বলেন, ‘২০০১ সালে বিএনপি ক্ষমতায় এসেছিল কীভাবে? তখন তো গ্যাস বিক্রির মুচলেকা দিয়েই ক্ষমতায় এসেছিল। তাহলে এখন তারা দেশ বিক্রি করবে? নাকি সেন্টমার্টিন দ্বীপ বিক্রি করার মুচলেকা দিয়ে আসতে চায়? আমি তো এইটুকু বলতে পারি, আমি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবের কন্যা, আমার হাত দিয়ে এই দেশের কোনো সম্পদ কারও কাছে বিক্রি করে আমি ক্ষমতায় আসতে চাই না। ওই গ্যাস বিক্রির মুচলেকা দিলে আমিও ক্ষমতায় থাকতে পারতাম। এখনও যদি বলি ওই সেন্টমার্টিন দ্বীপ বা আমাদের দেশ লিজ দেব, তাহলে আমার ক্ষমতায় থাকার কোনো অসুবিধা নেই। আমি জানি সেটা। কিন্তু আমার দ্বারা সেটা হবে না।’

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমাদের দেশের মানুষের ভাগ্য নিয়ে কাউকে খেলতে দেব না। আমার দেশের মানুষের ভাগ্য নিয়ে ছিনিমিনি খেলার অধিকার কারও নেই। আর আমার দেশের মাটি ব্যবহার করে কোনো জায়গায় কেউ সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড চালাবে, কাউকে এটাক করবে— এই ধরনের কাজ আমরা হতে দেব না। আমরা শান্তিতে বিশ্বাস করি, আমরা শান্তিপূর্ণ সহযোগিতায় বিশ্বাস করি।’

মিয়ানমার থেকে বাস্তুচ্যুত হয়ে প্রায় ১০ লাখ রোহিঙ্গা বাংলাদেশে আশ্রয় নেওয়ার প্রসঙ্গ তুলে শেখ হাসিনা বলেন, ‘তারপরও তো আমরা মিয়ানমারের সঙ্গে ঝগড়া করিনি। আমরা তাদের সঙ্গে আলোচনা চালাচ্ছি। এরা যাতে ফেরত যায় তার জন্য চেষ্টা চালাচ্ছি। আন্তর্জাতিক পর্যায়ে আমরা অনুরোধ করছি তারা ফেরত যাক নিজের দেশে। কিন্তু আমরা তো ঝগড়া বা যুদ্ধ করতে চাইনি। আমরা সকলের সঙ্গে বন্ধুত্ব কারও সঙ্গে বৈরিতা নয়, এই নীতিতেই বিশ্বাস করি। সেটাই আমরা মেনে চলব।’

Share