১৮ বছর আগে নিখোঁজ তানিয়া আজও খুঁজছেন বাবা-মাকে

নিজস্ব জেলা প্রতিনিধি : প্রায় ১৮ বছর আগে বাবার সঙ্গে ঢাকায় ফুপাতো বোনের বাসায় বেড়াতে গিয়ে নিখোঁজ হয়েছিল সাত বছরের শিশু তানিয়া। সেই তানিয়া এখন ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়া উপজেলার শান্তিনগর গ্রামের আনোয়ার হোসেনের স্ত্রী। নিজেই এখন ২ সন্তানের জননী। ২৫ বছরের তানিয়া আজও খুজেঁ ফিরছেন নিজের জননী ও জনককে।

তানিয়া জানান, তার বাবার নাম সুন্দর আলী শিকদার, মায়ের নাম বিলকিস বেগম। বাবা ভ্যানচালক ছিলেন। তিন বোন ও এক ভাইয়ের মধ্যে তিনি সবার বড়। অন্য বোনদের নাম সোনিয়া ও মনিকা। ভাইয়ের নাম কাইয়ুম। বাবার বাড়ি পিরোজপুরের মঠবাড়িয়ার বান্দাবাড়িতে, আর নানার বাড়ি বলতুলিতে।

মঠবাড়িয়ায় এই নামে কোনো স্থান নেই জানালে তানিয়া বলেন, শিশু বয়সে বাড়ি ছাড়ায় হয়ত নাম স্পষ্ট বলতে পারছেন না।

তানিয়া বলেন, প্রায় ১৮ বছর আগে বাবার সঙ্গে লঞ্চে ঢাকার লালমাটিয়ায় সরকারি কোয়ার্টারে ফুফাতো বোনের (নাম জানা নেই) বাসায় বেড়াতে এসেছিলেন। বোন ও বোন জামাই চাকরিজীবি ছিলেন। পরদিন সকালে এসে তাকে নিয়ে যাবে বলে তার বাবা বাড়িতে চলে যান। পরদিন তানিয়া ফুফাতো বোনের সন্তানকে নিয়ে স্কুলে যান। তাকে স্কুলে দিয়ে রাস্তায় নেমে হাঁটতে থাকলে একসময় স্কুল ও বোনের বাসা হারিয়ে ফেলেন।

তানিয়ার স্বামী আনোয়ার হোসেন বলেন, পথ হারিয়ে তানিয়া ওইদিন সন্ধ্যায় লালমাটিয়ার একটি দোকানের সামনে বসে কাঁদতে থাকলে দোকানে টিভি দেখতে থাকা এক ব্যক্তি তানিয়াকে তার বাসায় নিয়ে যায়। পরদিন লালমাটিয়ার একটি মসজিদের ইমাম মো. রিপন ওই বাসা থেকে তানিয়াকে তার বাসায় নিয়ে লালন-পালন করেন। ইমাম রিপনের বাড়ি ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলায় হওয়ার সুবাদে তাদের মধ্যে পরিচয়। একপর্যায় ২০১৪ সালে তানিয়ার সঙ্গে তার বিয়ে হয়। আনোয়ার হোসেনের ছ-মিলের ব্যবসা আছে। বর্তমানে তাদের লামিয়া (৫) নামে এক মেয়ে এবং জামির (২) নামে একটি ছেলে আছে।

আনোয়ার হোসেন বলেন, ‘বান্দাবাড়ি ও বলতুলি পিরোজপুর অথবা গোপলগঞ্জ জেলার কোনো স্থান হতে পারে। ২ বছর আগে সে মঠবাড়িয়া ও গোপালগঞ্জে এসে খোঁজা-খুঁজি করলেও কোন সন্ধান পায়নি।’

তানিয়া তার বাবা-মার জন্য এখনও কেঁদে দিন কাটান। কেউ তানিয়ার বাবা-মার খোঁজ পেলে তার স্বামী মো. আনোয়াার হোসেনের মোবাইল নম্বরে (০১৭১০-২২০২২৪) যোগাযোগের জন্য অনুরোধ জানিয়েছেন তিনি।

Share