১৭ দিন জেলে থেকেও পুরো বেতন পেলেন ধর্ষণ মামলার আসামি!

নিজস্ব জেলা প্রতিবেদক : বগুড়ার শেরপুর উপজেলায় প্রতিবন্ধী শিশুকে ধর্ষণের মামলায় ১৭ দিন জেলহাজতে ছিলেন কমিউনিটি হেলথকেয়ার সার্ভিস প্রোভাইডার (সিএইচসিপি) মনিরুজ্জামান প্লাবণ। তিনি মাসের অর্ধেকের বেশি সময় জেলহাজতে থাকলেও তাকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়নি। শুধু তাই নয়, তাকে পুরো সময়ের বেতন ভাতা দেওয়া হয়েছে।

জানা গেছে, উপজেলার এক প্রতিবন্ধী শিশু ধর্ষণের ঘটনাটি সালিসে ভুক্তভোগীর নামে ১৫ শতাংশ জমি লিখে দিয়ে ধামাচাপা দেওয়া হয়। গ্রাম্য সালিসের নেতৃত্ব দেন একই গ্রামের বাসিন্দা ও খানপুর কমিউনিটি ক্লিনিকের সিএইচসিপি মনিরুজ্জামান প্লাবণ (৩৫)। পরে ধর্ষণের শিকার শিশুটির পরিবার থানায় মামলা দায়ের করে। মামলায় ৬ আগস্ট মনিরুজ্জামান প্লাবনকে গ্রেপ্তার করে বগুড়া জেলা কারাগারে পাঠানো হয়। তিনি ১৭ দিন জেলহাজতে থাকার পর জামিনে মুক্ত হন। এ ক্ষেত্রে উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তার কাছে থেকে চাকরির প্রত্যয়ণপত্র নিয়ে আদালতে জমা দেন তিনি।

এদিকে, ১৭ দিন জেলহাজতে থাকলেও মনিরুজ্জামান প্লাবণের বিরুদ্ধে স্বাস্থ্য বিভাগের পক্ষ থেকে কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। এ ছাড়া ২ সেপ্টেম্বর তাকে জেলে থাকাসহ পুরো আগস্ট মাসের সরকারি বেতন ভাতা দেওয়া হয়। অথচ সরকারি চাকরি বিধি অনুযায়ী, কোনো কর্মকর্তা গ্রেপ্তার হয়ে জেলহাজতে গেলে, তিনি সাময়িকভাবে বরখাস্ত হবেন। আর মামলা শেষ না হওয়া পর্যন্ত তিনি সরকারি সুযোগ-সুবিধাসহ বেতনের অর্ধেক পাবেন।

এ বিষয়ে কমিউনিটি ক্লিনিকের সিএইচসিপি মনিরুজ্জামান প্লাবণ বলেন, ‘আমি গত ৫ আগস্ট সিলেট যাওয়ার জন্য ১০ দিনের ছুটি চেয়েছিলাম। সেটাই কাজে লেগেছে। এখন জামিনে আছি। এ ছাড়া আমার বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি।’ তিনি নিয়মিতভাবেই দাপ্তরিক সব কাজ করে যাচ্ছেন বলেও জানান।

শেরপুর উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. আবদুল কাদের বলেন, ‘ওই সিএইচসিপি কর্মকর্তা গ্রেপ্তারের বিষয়টি অফিসিয়ালিভাবে জানি না। লিখিতভাবে কেউ জানায়নি। তাই তিনি জেলে ছিল নাকি, কোথায় ছিল তা আমার জানা নেই।’

বগুড়ার ডেপুটি সিভিল সার্জন ডা. মোস্তাফিজার রহমান তুহিন বলেন, ‘নিয়মানুযায়ী ওই সিএইচসিপি সাময়িক বহিষ্কার হওয়ার কথা। কিন্তু এ ক্ষেত্রে কেন তা করা হয়নি, তা খতিয়ে দেখে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

Share