গুমাই বিলে বোরো চাষ শুরু, বেড়েছে কৃষকদের ব্যস্ততা


রাঙ্গুনিয়া প্রতিনিধি : শীতের সকালের মিষ্টি রোদে বীজতলা থেকে ধানের চারা তুলছেন কৃষক। পাশের জমিতে চলছে রোপণ, কেউ কেউ জমির আইল বাঁধছেন। সেচের পর জমি প্রস্তুত করছেন কেউ কেউ। জমিতে বোরো চাষে ব্যস্ত সময় পার করছেন কৃষকেরা।

এ দৃশ্য চট্টগ্রামের রাঙ্গুনিয়া উপজেলার গুমাই বিলের। উপজেলার চারটি ইউনিয়ন ও পৌরসভার একাংশজুড়ে ৩ হাজার ৫০০ হেক্টরের বিশাল মাঠ। আমন ঘরে তোলার পর শীত উপেক্ষা করে বোরো চাষে নতুন স্বপ্ন নিয়ে মাঠে নেমেছেন কৃষকেরা।

কৃষকদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, পর্যাপ্ত পানি পাওয়ায় কৃষকেরা এবার আগাম বীজতলা তৈরি করেছিলেন। আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় গুমাই বিলে এবার বীজতলার কোনো ক্ষতি হয়নি। তাই অন্যান্য বছরের তুলনায় কিছুটা আগেই চারা রোপণ শুরু হয়েছে। বিলে চলছে ধানের চারা রোপণের মহোৎসব। কৃষকদের মতে, বোরো চাষের গুরুত্বপূর্ণ সময় পৌষ থেকে মাঘ মাস। মূলত এ দুই মাস বোরো জমিতে ধানের চারা রোপণ করতে হয়।

আজ শনিবার সকালে গুমাই বিলের কদমতলী, পূর্ব ও মধ্য মরিয়মনগর এবং চন্দ্রঘোনা এলাকা ঘুরে দেখা যায়, কুয়াশা উপেক্ষা করেই কাজে নেমেছেন কৃষকেরা। তাঁদের এখন কথা বলার ফুরসত নেই। ভোর থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত কাজ চলছে। চন্দ্রঘোনা-কদমতলী ইউনিয়নের হাবীবের গোট্টা এলাকার কৃষক আবদুস সালামের সঙ্গে কথা হয়। তিনি বলেন, ‘আমার দুই কানি সাত গন্ডা জমির প্রায় চারা রোপণ হয়ে গেছে। এবার পর্যাপ্ত পানি আছে। তাই আগাম চারা রোপণ করা সম্ভব হয়েছে। এখন পর্যন্ত বিদ্যুৎ সরবরাহের পরিস্থিতি ভালো থাকায় সেচযন্ত্র পুরোদমে চলছে। এবার বাম্পার ফলনের আশা করছি।’

গুমাইবিল পানি ব্যবস্থাপনা অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি মোজাম্মেল হক বলেন, এই মৌসুমে এখন পর্যন্ত নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সরবরাহ পাওয়া যাচ্ছে। তাই পানি সরবরাহে কোনো সমস্যা হচ্ছে না। পর্যাপ্ত পানি পাওয়ায় এবার বোরো ফলন ভালো হবে। পানি উন্নয়ন বোর্ডের কর্মকর্তারাও সব সময় তদারক করছেন। বিলে পাকা স্থাপনা নির্মাণ রোধ করা গেলে পানি নিষ্কাশনেও কোনো বাধা থাকবে না বলে মনে করেন তিনি।

উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা উত্তম কুমার বলেন, গেল মৌসুমে ৩ হাজার ৪৩৫ হেক্টর জমিতে আমন ধানের চাষ হয়েছে। এবারের লক্ষ্যমাত্রাও একই ধরা হয়েছে। এই বিলে প্রায় আট হাজার কৃষক চাষ করেন।

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কারিমা আক্তার বলেন, আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় গুমাই বিলে এবার বীজতলা ভালো হয়েছে। কৃষকরা প্রণোদনার বীজের চারা রোপণ করেছেন। এ ছাড়া পর্যাপ্ত পানি সরবরাহ হচ্ছে। উন্নত জাতের ধানের বীজ ব্যবহার করায় এবার লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে যাবে বলে আশা করছেন তিনি।

Share